দুনিয়ার সমস্ত মেয়েরা লাজুক পুরুষ ভালবাসে এমন মাথার দিব্যি কেউ দেয়নি তবে লজ্জা পাওয়ার বিষয়ে কিছু ইন্টারেস্টিং তথ্য রয়েছে যা কিনা লাজুকতাকে একটা অন্য দৃষ্টিতে দেখতে সহায়ক হতে পারে |
কোরিন ডায়িক নামধারী এক ভদ্রলোকের নেতৃত্বে একদল মনোবিজ্ঞানী একটি পরীক্ষা চালায় যেখানে জনাষাটেক অংশগ্রহণকারীকে প্রথমে এমন কিছু ঘটনার বিষয়ে পড়তে দেওয়া হয় যাতে কেউ একজন নৈতিকভাবে কোনো ভুল কাজ করেছে বা অপ্রস্তুত হওয়ার মত কিছু ঘটিয়েছে | পড়া হয়ে গেলে পর সবাইকে এবার দোষীদের ছবি দেখানো হয় যেখানে দোষী ব্যক্তিদের চার রকম মুখভঙ্গিমা ব্যক্ত হয়েছে— লজ্জায় অবনত, লজ্জায় মুখ লাল, ভাবলেশহীন এবং ভাবলেশহীনতার সাথে আরক্ত মুখ | এরপর সবাইকে বলা হয় দোষীদের প্রতি নিজেদের সমবেদনাকে রেট করতে |
দেখা যায় যে লজ্জায় মুখ লাল হওয়া দোষীদের প্রতি অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সমবেদনার উদ্রেক হয়েছে | ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, বার্কলে'র সাইকোলজিস্ট ডাকার কেল্ট্নার এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন, "লজ্জায় মুখ লাল হওয়ার অর্থ বোঝায় 'আমি পরোয়া করি; আমি জানি আমি সামাজিক চুক্তি ভঙ্গ করেছি |' "
লজ্জায় মুখ লাল হওয়াটা আমাদের কারও নিয়ন্ত্রণে নেই; আশ্চর্যের শোনালেও ঠিক এই কারণেই অধিকাংশ মানুষ এটাকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখে থাকে | কোরিন ডায়িকের মতে যেহেতু লজ্জা পাওয়া আমাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে, এটা আমাদের অপ্রস্তুত হওয়ার একটা খাঁটি স্বাক্ষর বহন করে | আর কেল্ট্নারের মতে লজ্জা পাওয়া বা লাজুকতা হলো একটি 'নৈতিক আবেগ' | এটা পরোক্ষভাবে আমাদের বিনম্রতা ও শান্তিরক্ষার তাগিদকে প্রকাশ করে | অর্থাৎ লাজুকতা মানুষকে পৃথক করে না, বরং তাকে অন্যদের আরো কাছেই আনে |
কেল্ট্নার লাজুকতার উৎস সন্ধান করতে গিয়ে দেখেছেন যে অনেক প্রাইমেটরাও লড়াই-ঝগড়ার পড়ে শান্তি চুক্তি করতে উদ্যোগ নেয় এবং তখন তারা যে হাবভাব ফুটিয়ে তোলে তার সাথে আমাদের লজ্জা পাওয়ার হাবভাবের বেশ মিল আছে |
তাহলে ব্যাপারটা কী দাঁড়ালো? শুধু মেয়েরা নয়, অনেক মানুষই আসলে লাজুকতা ব্যাপারটাকে ইতিবাচক ভাবে দেখে এবং পছন্দ করে কারণ এতে পরোক্ষে অন্যের প্রতি উৎকণ্ঠা প্রকাশ পায় | সুতরাং কাউকে ভালো লাগার ক্ষেত্রেও এটা একটা কারণ হিসেবে বিবেচিত হওয়া আশ্চর্যের নয় |
0 Comments